Wednesday 27 April 2016


-'কে তোমার পরাণ জেঠু?'
-'আচ্ছা মুস্কিল তো! পরাণ জেঠু, একটু খুঁড়িয়ে হাঁটতো যে! পরাণ জেঠুর চার মেয়ে- কলি, বুলি, অলি আর মলি, আর ওদের একমাত্র দাদা এই পরেশদা!'
-'আচ্ছা! তা আমি তো কাউকেই চিনি না!'
-'তুমি চিনবে কী করে? তুমি আমাদের বাড়িতে গেছোই বা কবার যে চিনবে?'
-'তুমিও তো নিয়ে যাও নি!'
-'তা পরাণ জেঠুর চার মেয়ে...কথায় বলে না..অতি বড় ঘরনী না পায় ঘর আর অতি বড় সুন্দরী না পায় বর...'
-'ওরা খুব সুন্দরী ছিলো বুঝি?'
-' কলি ই যা একটু কালো ছিলো। বাকীরা বেশ ভালো। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে কারোরই পাত্র জুটলো না!'
-'আহা রে! তা তুমিও তো একজনকে উদ্ধার করতে পারতে!'
-'পারতাম তো! বলেও ছিলাম বুলিকে। বুলিও রাজি ছিলো। কিন্তু বাদ সাধলো ঐ পরেশ দা!'
-'কেন?'
-বলে কি না-'ভাই... তুই আমার আপনার জন, জেনেশুনে তোর ক্ষতি করি কী করে? জানিস, রাত বারোটার পর বুলি পাগল হয়ে যায়.. একা একা হাসে, কাঁদে, কথা বলে... তখন কেউ ওকে বিরক্ত করলে মারতেও যায়! আবার ভোর হলেই সব ঠিক হয়ে যায়। ভাই, তোর ভালোর জন্যই বলছি, তুই ওকে বিয়ে করিস না!'
-'আর তুমিও সবকিছু বিশ্বাস করে পিছটান দিলে?'
-'না দিয়ে আর উপায় কী? কিন্তু তারপর থেকে নিজেকে কেমন অপরাধী মনে হতো। বুলিও জিজ্ঞাসু চোখে আমার দিকে এমন করে তাকাতো... ওর ঐ দৃষ্টিকে আড়াল করতেই একদিন বাড়ি ছেড়ে পালানোর সিদ্ধান্ত নিলাম!'
-'বুলি এখন কেমন আছে জানো কি?'
-' হ্যাঁ... আজ পরেশদা'র কাছ থেকে জানলাম ওদের কথা...'
-'কী জানলে?'
-'কলি সুইসাইড করেছে।অলি কোন আশ্রমে চলে গেছে। মলি পালিয়ে গেছে কারো সঙ্গে আর বুলি? সে পুরোপুরি উন্মাদ হয়ে গেছে...'
-'কী শোনালে গো!'
-'আর পরেশদা আজকে আরেকটা কথাও বললো যার জন্য বাকী জীবন আর নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না...'
-'কী?'
-' সেদিন পরেশ দা যা বলেছিলো, তার পুরোটাই ছিলো মিথ্যে!

No comments:

Post a Comment