Wednesday 27 April 2016

থচ পাশের বাড়ির সুন্দরদির মতো সে আরামে দিন কাটাতে পারত। সুন্দরদি গত বারো বছর ধরে একটা কলেজে পার্টটাইম করে হাতখরচ বাদ দিয়েও বছরে বেশ কিছু টাকা ব্যাঙ্কে জমাচ্ছেন। আর মানসী আমাদের জয়েন্ট অ্যাকাউন্টে সই দিয়ে এম.এ পাশ হোম মিনিস্টার। তবে সেটা কোন ব্যাপার নয়। ছুটির দিন। আমি যদি এখন বাজারে গিয়ে পছন্দসই ইলিশটা পেয়ে যাই, আর এনে ফেলে দিই মানসীর সামনে -- কোন সমস্যা হবে না। হয়ত জিজ্ঞেস করবে,-- 'মাছটা সেদ্ধ খাবে না ঝোল করে দেব।' টাটকা ইলিশ হলে আমার আবার দুটোই প্রিয়। তবে আবদারের লিস্টে এক নম্বরে থাকবে সর্ষে বাটা -- শুকনো শুকনো -- ওপরে একটা টসটসে লাল কাঁচা লঙ্কা। উসপ -- জিভে জল এসে যাচ্ছে এখনই। মানসী রাঁধে ভালো। আসলে সে দেখতে ভালো, তাই তার সবটাই ভালো। মনকে সব সময় ভরিয়ে রাখে। দুপুরে খেতে বসেছি, শুধু মাছ-ভাত। কোলের টুকরোগুলো ঝোলে, পিঠের পিসগুলো ভাপে রসময় হয়ে গরম ভাতের পাশে চুপচাপ। যেকোনো মুহুর্তে আমার রসনাকে তৃপ্ত করতে পারে -- ভাবতেই ভালো লাগছে। ইলিশের আমেজই আলাদা। আহা, কাঁচাই বা কি, আর সর্ষে-ঝোলেই বা কি -- রূপ একেবারে ঝরে পড়ছে যেন। মনকে সব সময় ভরিয়ে রাখে। মাছ এনে দেবার পর মানসী তার নরম গোলগাল ফর্সা দুটো হাতে সেটাকে কাটছে, গন্ধ বেরোচ্ছে ইলিশের -- একটু পরে কড়াইতে দিলে আরও সুস্বাদু গন্ধ .... আহা, এর সঙ্গে মশলায়-নুনে-ঝালে মানসীর মনের মাধুরী তার সরু রূপসী আঙুল বেয়ে মাছে মিশছে...... দৃশ্যটা ভীষণ সিনেমাটিক। সে যেন ঠিক রোববারের সাপলিমেন্টারিতে গল্পের গৃহবধু। কিন্তু দাদা,গল্পের গৃহবধূটিকে এতো অভিমানী করে দেখালেন কেন আপনি? ছিঃ এতো সুন্দর একটা সংসার! এতো সুন্দরী বউ, স্বামীকে যিনি সবদিক থেকে সুখে রেখেছেন .... বলা নেই কওয়া নেই, তাকে দিয়ে সুইসাইড করালেন! তাও আবার কী! -- ভরা বর্ষায় স্বামীকে সকালে ইলিশ মাছ ভাজা-খিচুরি, আর দুপুরে সর্ষে-ইলিশ খাইয়ে দাইয়ে তারপর....! কৈফিয়তের চিরকুট টেবিলে সাজিয়ে রাখলেই বুঝি ফেমিনিজমের গল্প লেখা যায়! ভারি আপনার ইয়ে......। সুন্দরদিকে রোববারগূলোতে এই সময় ছাদে স্নানের পর চুল শুকোতে দেখা যায়। ওই তো, ছোট তোয়ালে দিয়ে সদ্য ভেজা চুল ঝাড়ছেন। তন্বী, দুধ-সাদা গাউনে প্যাঁচানো উজ্জ্বল সুখী শরীরটা এখান থেকেই স্পষ্ট। ......
নাঃ আজ ইলিশই খাব --

No comments:

Post a Comment