হ্যাং
শিবাশিস
চট্টোপাধ্যায়।
তিনি পুরোদস্তুর বাঙালি এবং ভারতীয়। তিনি ভয়হীন। কারণ রেশন কার্ড থেকে শুরু করে নাগরিকত্বের দুর্লভ সব নথি তাঁর নখদর্পনে। ভ্যালিড লিগ্যাসি ডেটাও তো আছে ।
মানবতাবাদে তাঁর অগাধ বিশ্বাস। উপরন্তু বিশেষ একটি রাজনৈতিক দর্শণে বিশ্বাস তাকে দিয়েছে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি, চিন্তা ও চেতনা। সংবাদপত্রে কলাম লেখেন। তুখোর তাঁর রাজনৈতিক বিশ্লেষণ। এজন্য অনেকেই তাঁকে সমীহও করেন।
জীবনে এই মানুষটার অন্য কোনো সমস্যাই নেই। থাকার কথাও নয়। (তবে ইদানিং তিনি খুব ডিসটার্বড; খুব সমস্যা করছে তাঁর নতুন কেনা টাচ্ ফোন আর তাঁর আঙুলও! )
সম্প্রতি তিনি স্মার্টফোন কিনেছেন। ক'দিনের মধ্যেই খুলে ফেলেছেন ফেসবুক একাউন্ট। নিজেরই বছরের এগারোর মেয়ের কাছে শিখে নিয়েছেন কী ভাবে লাইক, শেয়ার দিতে হয়। দিতে হয় স্টেটাস আপডেট।
ফলে এখন তিনি অকুতোভয়। স্ক্রোল করে করে দেখছেন ফেবুর বন্ধুদের আপডেট্স, লাইকস, এন্ড শেরারস। (গভীর রাতে অচেনা সুন্দরীদের টাইম লাইনেও ঢুকে পড়ছেন। নেশার মতো লাগছে কিন্তু!)
কিন্তু ওই যে বললাম সমস্যা করছে তাঁর ফোন আর আঙুল!
গভীর রাত। স্ক্রোল করতে করতে হঠাৎ এসিড অ্যাটাক ভিক্টিম একটি মেয়ের বিকৃত মুখাবয়ব । নিচে লেখা SEVEN YEARS OF BAD LUCK IF YOU DON'T HIT LIKE...
কি মুসকিল! তিনি দ্রুত স্ক্রোল করে এই অভব্য স্থান ত্যাগ করলেন।
ওর বাবা! এবার দেখছি আরেকটা --গলায় বিশালাকৃতির টিউমার-- একটি বছর আটের শিশু...
স্ক্রোল স্ক্রোল স্ক্রোল। যাঃ বাবা রক্ষা। কী বিচ্ছিরি ছবিটা!!
না মনে হচ্ছে আর নেই।
আচ্ছা কারা এসব ছাইপাস পোস্ট করে!! বিকৃত রুচিতে ভরে গেছে দেশটা। ছিঃ
এবার তিনি ধাতস্থ। মনোযোগ দিয়ে খুটিয়ে খুটিয়ে পড়ছেন, দেখছেন,শুনছেন।
ইস্! কী জ্বালাতন! আবারও এসেছে দেখি কালকের প্রতিক্রিয়াশীল পেজটা! বিষাক্ত জঘন্য...
"বাংলাদেশের ফেনিতে পঞ্চাশ ঘর হিন্দু বাড়িতে আগুন। যুবতী ধর্ষিতা। প্রশাসন নিষ্ক্রিয়।"
শেয়ার করা লিঙ্কের সাথে আগুনে পোড়া গ্রামচিত্র। ক্রন্দনরত স্ত্রীলোক, কোলে শিশু...
ওহ!!!!!! এবারে আরো দ্রুত স্ক্রোল চালালেন তিনি।
আঙুল ঘসছেন সজোরে। কিন্তু কী আশ্চর্য! স্ক্রোল হচ্ছে না।
যাতা ফোন একটা! আজও কালকের মতো হ্যাং হলো দেখছি!!
আচ্ছা ঠিক এখানেই মানে এই পেজেই...এই আপডেটেই কেন হ্যাং মারছে ফোনটা!!
নিতান্ত অনোন্যপায় হয়ে অগত্যা তিনি চোখ বুজে রইলেন । আচ্ছা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র নয়তো! তাই হবে হয়তো।
শেষে ফোন রেখে উঠে পড়লেন। দুচোখে এক দীর্ঘ রাতের ছায়া হাতছানি দিচ্ছে। ঘুম পাচ্ছে খুব।
সকালে নিশ্চয়ই এই হ্যাং সেরে যাবে!
মানবতাবাদে তাঁর অগাধ বিশ্বাস। উপরন্তু বিশেষ একটি রাজনৈতিক দর্শণে বিশ্বাস তাকে দিয়েছে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি, চিন্তা ও চেতনা। সংবাদপত্রে কলাম লেখেন। তুখোর তাঁর রাজনৈতিক বিশ্লেষণ। এজন্য অনেকেই তাঁকে সমীহও করেন।
জীবনে এই মানুষটার অন্য কোনো সমস্যাই নেই। থাকার কথাও নয়। (তবে ইদানিং তিনি খুব ডিসটার্বড; খুব সমস্যা করছে তাঁর নতুন কেনা টাচ্ ফোন আর তাঁর আঙুলও! )
সম্প্রতি তিনি স্মার্টফোন কিনেছেন। ক'দিনের মধ্যেই খুলে ফেলেছেন ফেসবুক একাউন্ট। নিজেরই বছরের এগারোর মেয়ের কাছে শিখে নিয়েছেন কী ভাবে লাইক, শেয়ার দিতে হয়। দিতে হয় স্টেটাস আপডেট।
ফলে এখন তিনি অকুতোভয়। স্ক্রোল করে করে দেখছেন ফেবুর বন্ধুদের আপডেট্স, লাইকস, এন্ড শেরারস। (গভীর রাতে অচেনা সুন্দরীদের টাইম লাইনেও ঢুকে পড়ছেন। নেশার মতো লাগছে কিন্তু!)
কিন্তু ওই যে বললাম সমস্যা করছে তাঁর ফোন আর আঙুল!
গভীর রাত। স্ক্রোল করতে করতে হঠাৎ এসিড অ্যাটাক ভিক্টিম একটি মেয়ের বিকৃত মুখাবয়ব । নিচে লেখা SEVEN YEARS OF BAD LUCK IF YOU DON'T HIT LIKE...
কি মুসকিল! তিনি দ্রুত স্ক্রোল করে এই অভব্য স্থান ত্যাগ করলেন।
ওর বাবা! এবার দেখছি আরেকটা --গলায় বিশালাকৃতির টিউমার-- একটি বছর আটের শিশু...
স্ক্রোল স্ক্রোল স্ক্রোল। যাঃ বাবা রক্ষা। কী বিচ্ছিরি ছবিটা!!
না মনে হচ্ছে আর নেই।
আচ্ছা কারা এসব ছাইপাস পোস্ট করে!! বিকৃত রুচিতে ভরে গেছে দেশটা। ছিঃ
এবার তিনি ধাতস্থ। মনোযোগ দিয়ে খুটিয়ে খুটিয়ে পড়ছেন, দেখছেন,শুনছেন।
ইস্! কী জ্বালাতন! আবারও এসেছে দেখি কালকের প্রতিক্রিয়াশীল পেজটা! বিষাক্ত জঘন্য...
"বাংলাদেশের ফেনিতে পঞ্চাশ ঘর হিন্দু বাড়িতে আগুন। যুবতী ধর্ষিতা। প্রশাসন নিষ্ক্রিয়।"
শেয়ার করা লিঙ্কের সাথে আগুনে পোড়া গ্রামচিত্র। ক্রন্দনরত স্ত্রীলোক, কোলে শিশু...
ওহ!!!!!! এবারে আরো দ্রুত স্ক্রোল চালালেন তিনি।
আঙুল ঘসছেন সজোরে। কিন্তু কী আশ্চর্য! স্ক্রোল হচ্ছে না।
যাতা ফোন একটা! আজও কালকের মতো হ্যাং হলো দেখছি!!
আচ্ছা ঠিক এখানেই মানে এই পেজেই...এই আপডেটেই কেন হ্যাং মারছে ফোনটা!!
নিতান্ত অনোন্যপায় হয়ে অগত্যা তিনি চোখ বুজে রইলেন । আচ্ছা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র নয়তো! তাই হবে হয়তো।
শেষে ফোন রেখে উঠে পড়লেন। দুচোখে এক দীর্ঘ রাতের ছায়া হাতছানি দিচ্ছে। ঘুম পাচ্ছে খুব।
সকালে নিশ্চয়ই এই হ্যাং সেরে যাবে!
No comments:
Post a Comment